• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন

সাতক্ষীরায় তিন বছরে ২৫২টি অভিযানে ৬১১টি প্রতিষ্ঠানকে ৪২ লাখ টাকা জরিমানা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৩১ জুলাই ২০২৩

আব্দুস সামাদ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: 
জেলায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ দিন দিন বাড়ছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থায় গত তিন অর্থ বছরে ২৫২টি অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা। এসব অভিযানে ৬১১টি প্রতিষ্ঠানকে ৪১ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমান করেছে অধিদপ্তরটি। ওজনে কম দেওয়া, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য পন্য বিক্রয়, নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পন্য বিক্রয়, খাবারে বিষাক্ত বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার, মিথ্যা বা চাতুর্যপূর্ণ বিজ্ঞাপনে নিম্নমানের পণ্য বিক্রয় করা, ভেজাল পণ্য বিক্রয়, বিএসটিআই’র অনুমোদনহীন পন্য বিক্রয় করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ অর্থ জরিমানা করা হয়। তবে, আইনে ভোক্তাদের সুবিধার কথা বলা হলেও জনসচেতনতা অভাবে সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সাতক্ষীরায় ১২২টি অভিযানে ২৯৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৮২টি অভিযানে ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১১লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৪৮টি অভিযানে ১২৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে বেশ কিছু অভিযোগ সমাধাণ করা হয়েছে।
অফিস সূত্রে জানা যায়, কোনো দোকানে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা ভোক্তা অধিকার-বিরোধী কাজ। শুধু এটিই নয়, খাবারে বিষাক্ত বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা নিষেধ। মিথ্যা বা চাতুর্যপূর্ণ বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাকে নিম্নমানের পণ্য কিনতে উদ্বুদ্ধ করা, দাম অনুযায়ী মান বা সেবা প্রদান না করা, ওজনে বা পরিমাপে কম দেওয়া বা এ সংক্রান্ত কোনো জালিয়াতি করা, নকল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ পন্য তৈরি বা বিক্রি করা ভোক্তা অধিকারে বিরোধী কাজ বা দন্ডনীয় অপরাধ।
অফিস থেকে আরও জানাযায়, এমনকি সরকারি যেসব সেবা আপনাকে দেওয়া হয় যেমন যোগাযোগ, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পয়োনিষ্কাশন এসব নিয়েও আপনি অভিযোগ করতে পারবেন ভোক্তা অধিকার আইনে। খাবার দোকান, আবাসিক হোটেল বা স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সেবা নিয়েও অভিযোগ থাকলেও এ আইনে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। একই আইনে এ সংক্রান্ত ভোক্তাবিরোধী কাজের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং নগদ অর্থ জরিমানা করার সুযোগ রয়েছে।
আরও জানা যায়, প্রতারিত হওয়ার এক মাসের মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরে বিনামূল্যে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। প্রাথমিক তদন্ত করবে ভোক্তা অধিদপ্তর এবং তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে করা হবে মামলা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যে পরিমাণ আর্থিক জরিমানা করা হবে, তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়। ধরুন, আপনি বাজারে পন্য ক্রয় করার জন্য গেলেন। এসময় বিক্রেতা পন্য সরকারি নির্ধারিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে। তাহলে আপনি সেই ক্রয় রসিদসহ ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন। কারণ, বেশি মূল্যে বিক্রি করা আপনার ভোক্তা অধিকারের লঙ্ঘন বা কোনো পণ্য কিনলেন। আবার পণ্য ক্রয়ের পর দেখা গেল সেটা ভেজাল বা নকল পণ্য, সে ক্ষেত্রেও আপনি অভিযোগ করতে পারেন।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক মো: নাজমুল হাসান বলেন, ভোক্তা—অধিকার সংরক্ষণ আইনটি ২০০৯ সালের হলেও এ আইনের বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সে কারণে এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায় কম। এ বিষয়ে যত বেশি অভিযোগ পাওয়া যাবে আমরা তত বেশি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads